• ঢাকা
  • ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ১১ সেকেন্ড পূর্বে
শাহীন মাহমুদ রাসেল
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০৮:০৮ রাত
bd24live style=

মিয়ানমারে কোটি কোটি টাকা পাচারে বেপরোয়া গরু চোরাচালান চক্র

ছবি: প্রতিনিধি

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির (এএ) মধ্যে তুমুল লড়াই-সংঘাত চলছে। উত্তেজনাকর এই পরিস্থিতির মধ্যেও থেমে নেই চোরাচালান। দেশে মিয়ানমারের গরুর চাহিদা রয়েছে প্রচুর। বৈধ পথে দীর্ঘদিন ধরে গরু না আসার সুযোগটিই নিচ্ছে চোরাকারবারিরা। প্রতি রাতে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ঢুকছে শত শত চোরাই গরু। পেছনে কাজ করে দুই দেশের একটি সংঘবদ্ধ চক্র। কক্সবাজারের রামু ও বান্দরবানেরর নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তজুড়ে রয়েছে তাদের ‘গরু চোরাচালানের জাল’।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় বাংলাদেশ-মায়ানমারের সীমান্ত রয়েছে ৭১ কিলোমিটার। যার মধ্যে সবচেয়ে সুবিধাজনক সীমান্ত ঘুমধুম, জামছড়ি, জারুলিয়াছড়ি, আশারতলী, ফুলতলী, দোছড়ি এলাকায়। এই সীমান্তের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা দিয়ে চোরাই গরু পাচার বৃদ্ধি পেয়েছে। নাইক্ষ্যংছড়ি ও রামু উপজেলার রাজনৈতিক নেতা ও প্রভাবশালীমহল পর্দার আড়াল থেকে শ্রমিক পাঠিয়ে এই অবৈধ বাণিজ্য করছে।

এতে করে সরকার মোটা অঙ্কের রাজস্ব আদায় থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছে তেমনি দেশের কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে চলে যাচ্ছে মিয়ানমারে। ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। গত দেড় বছরের অধিক সময় ধরে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে হাজার হাজার চোরাই গরু দেশে ঢুকেছে। থাইল্যান্ড থেকে মিয়ানমার হয়ে আনা এসব গরু কিনে আনতে শত কোটি টাকা অবৈধভাবে পাচার হয়েছে বিদেশে। প্রকাশ্যে গরু এনে বিদেশে টাকা পাঠানো হলেও জড়িতদের বিরুদ্ধে এখনো কার্যত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। এমনকি কারা এই বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েছে তার সঠিক তথ্যও নেই প্রশাসনের কাছে।

জানা গেছে, মিয়ানমারে ৪০ হাজার টাকায় কেনা ৪ মণ ওজনের একটি গরু চোরাই পথে দেশে এনে বিক্রি করলে পাওয়া যায় অন্তত এক লাখ টাকা। কিন্তু এমন একটি গরু আনতে খরচ পড়ে ৫০ হাজার টাকার মতো। এর পর ‘বাজার-স্লিপ’-এর মাধ্যমে জোয়ারিয়ানালা-কালিরছড়া হয়ে সেই গরু চলে যায় ঈদগাঁও বাজারে। বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে মিয়ানমারের চক্রের সঙ্গে মিলে রামুর কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের একটি চক্র চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ এই ব্যবসা। এই টাকা পরিশোধ করতে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও চোরাকারবারিদের একটি চক্র প্রতিদিন দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা হুন্ডিতে পাচার করছেন মিয়ানমারে। 

নাইক্ষ্যংছড়ি কুরুকপাতা, বাইশারী, তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি এবং রামু উপজেলার হাজিরপাড়া, মৌলভীরকাটা ঘুরে মিলেছে এই তথ্য।

চোরাচালানে জড়িত যারা:

এইসময়ে উপজেলার গর্জনিয়া-কচ্ছপিয়া ইউনিয়নে অন্তত ৮টি ছোট ছোট চক্র রয়েছে, যারা গরু চোরাকারবারে জড়িত। মিয়ানমার থেকে গরু এনে গর্জনিয়া বাজার রশিদ কেটে জোয়ারিয়ানালা ও কালিরছড়া হয়ে ঈদগাঁও বাজারসহ বিভিন্ন হাটে তারা বিক্রি করে। 

স্থানীয়রা জানান, কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের তিতারপাড়া গ্রামের মৃত নুরুল ইসলাম সিকদারের ছেলে নাছির উদ্দিন সোহেল ওরফে সোহেল সিকদার, দক্ষিণ মৌলভীকাটার মোহাম্মদ ইলিয়াসের ছেলে ইয়াছিন আরাফাত রিসাদ, ফাক্রিকাটা এলাকার মোক্তার আহাম্মদের ছেলে নুরু, দক্ষিণ দৌছড়ী এলাকার মোচা আলীর ছেলে আব্দুর রহিম, হাজী পাড়ার মালেকু জামানের ছেলে নুরুল আলম ও একই গ্রামের মোরশেদের ছেলে আবু তালেব। এই ৬ জন ওই চোরাকারবারি চক্রের মূল হোতা। তারা আলাদাভাবে সিন্ডিকেট পরিচালনা করে। মূলত তাদের মাধ্যমে মিয়ানমার থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে অবৈধ পথে আসা গরুগুলো জোয়ারিয়ানালা-কালিরছড়া হয়ে সারাদেশে চলে যাচ্ছে। তাদের কাজ, রাতের অন্ধকারে সীমান্তের ওপার থেকে গরু এনে সীমান্তবর্তী গ্রামে রাখা। এর পর কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দামের ভাই ‘শুক্কুর’ ওই গরু জোয়ারিয়ানালা-কালিরছড়া পার করার ব্যবস্থা করে। তাকে চোরাকারবারিদের ‘লাইনম্যান’ বলা হয়। শুক্কুরের সহকারী হিসেবে রয়েছে সাদ্দামসহ তার অপরাপর ভাইয়েরা।

অন্যদিকে মিয়ানমার অংশে আরাকান রাজ্যের নিয়ন্ত্রণকারী মাদক সম্রাট রোহিঙ্গা নবী হোসেন বিজিপির সহযোগিতায় চোরাই গরু বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। বিজিপির সঙ্গে লেনদেন ফয়সালা করে ওই ছয়জন। চক্রটি গরু ছাড়াও, মিয়ানমার থেকে ইয়াবা, আইস, বিদেশি মদ, সিগারেট এবং কফি ও ক্যালসিয়ামও নিয়ে আসে বলে অভিযোগ রয়েছে।

চোরাচালানে কোটি কোটি টাকা পাচার:

বতর্মানে দেশে যে ডলার সংকট চলছে, তার অন্যতম কারণ চোরাচালানের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার হয়ে যাওয়া। অবৈধভাবে গরু চোরাচালানের মাধ্যমে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা মিয়ানমারে পাচার হচ্ছে। এই পরিমাণ অর্থ, দুটি পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয়ের চেয়েও বেশি। এই শক্তিশালী সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন থেকে এ কাজ করে আসছে। বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোহেল সিকদার, ইয়াছিন আরাফাত রিসাদ, ছেলে নুরু, আব্দুর রহিম, নুরুল আলম ও আবু তালেবসহ এই সিন্ডিকেটটি বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে দায়িত্ব পালন করে। গরুর চালান এলাকার বাইরে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন এসব চোরাকারবারিরা। এক্ষেত্রে কেউ পুঁজি, কেউ ক্ষমতা বিনিয়োগ করে থাকে। আর এই চোরাচালানের টাকা মিয়ানমারে পাঠাতে তাদের সাথে কাজ করছে স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতা।

সংশ্লিষ্টদের দাবি, মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে আসা গরুর ৯৫ শতাংশও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর নজরে আসছে না। ফলে অনেকটা নির্বিঘ্নে নিরাপদে দেশে আসছে গরুর সাথে বিপুল মাদকের চালান। আবার এই টাকা পরিশোধ করতে দেশের টাকা পাচার হচ্ছে।

যেভাবে গরু আসে:

অনুসন্ধানে জানা যায়, সীমান্ত দিয়ে পাচার হয়ে বাংলাদেশে যে-সব গরু আসে, সেগুলো মূলত মিয়ানমারের আরকান রাজ্যের। আলীকদম উপজেলার দক্ষিণে এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার পূর্ব-দক্ষিণে আরাকান রাজ্য। দুই উপজেলার অন্তত দুইশ কিলোমিটার সীমানা পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার। সীমান্তের ওপাড়ের পাচারকারীরা বিভিন্ন হাট কিংবা গ্রাম থেকে গরুগুলো কেনে। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথ পাড়ি দিয়ে হেঁটেই পার হয়ে দুই উপজেলার কুরুকপাতা, বাইশারী, তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, আশারতলী, জামছড়ি, বম্বনিয়া এবং রামু উপজেলার হাজিরপাড়া, মৌলভীরকাটার গ্রামের খাটালে (গরু রাখার স্থান)। এর পর সেই গরু চোরাই পথে কালিরছড়া ও জোয়ারিয়ানালা পার করে ঈদগাঁও বাজারে আনার ব্যবস্থা করে ‘শুক্কুর-সাদ্দাম সিন্ডিকেট’।

মিয়ানমারে ওইসব গরুর গায়ে এক দফা সিল মারা হয়। বাংলাদেশে আসার পরও সিল পড়ে। এগুলো চোরাকারবারিদের সাংকেতিক সিল। সীমান্তের ওপারে কিছু যুবক রাখাল হিসেবে কিছু সময় গরুগুলো দেখে রাখে। ‘সবুজ সংকেত’ পেলেই শুরু হয় বাংলাদেশে পাচার। ‘লাইন খোলা’ অর্থাৎ কোন সময়ে কত ঘণ্টা পাচার চলবে, সেই বার্তা আসে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির কাছ থেকে। মিয়ানমারের রাখালরা সীমান্ত পার করে গরু বুঝিয়ে দেয় বাংলাদেশি রাখালদের হাতে। এ জন্য গরুপ্রতি তারা পায় আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা।

বান্দরবান জেলায় মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত প্রায় ২০০ কিলোমিটার। এর মধ্যে কয়েক কিলোমিটারে কাঁটাতারের বেড়া নেই। সীমান্তে অপরাধ ঠেকাতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) একাধিক ইউনিট এ অঞ্চলে কাজ করে। তারপরও সীমান্ত দিয়ে গরু চোরাচালান বন্ধ হচ্ছে না।

স্থানীয় গরু ব্যবসায়ীরা জানান, সীমান্তে গড়ে উঠেছে কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের ৬জনের গরু চোরাকারবারির শক্তিশালী চক্র। বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতি রাতে চোরাই গরু পারাপারে সীমান্ত এলাকায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। তবে চোরাকারবারিরা এতটাই প্রভাবশালী যে, ভয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা মুখ খুলতে চান না। নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের অন্তত ১১টি পয়েন্ট দিয়ে প্রতিরাতে পাঁচ শতাধিক গরু মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে ঢুকছে বাংলাদেশে।

আলীকদম-নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্ত পয়েন্টগুলো ঘুরে দেখা যায়, দিনের বেলা কৃষিকাজের কথা বলে মিয়ানমার থেকে যেমন বাংলাদেশ ভূখণ্ডে প্রবেশ করে, তেমনি বাংলাদেশিরাও মিয়ানমারে ঢুকে পড়ে অনায়াসে। এমন অবস্থা নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের আশারতলী, ফুলতলী, জামছড়ি, কম্বনিয়া, চেরারকুল, লম্বাশিয়া, ভাল্লুকখাইয়া ও দোছড়ি বেশি। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের এই এলাকায় অনেক স্থানেই কাঁটাতারের বেড়া নেই।

বিজিবির সূত্র বলছে, ঘুমধুম ইউনিয়ন থেকে শুরু করে আলীকদম সীমানা পর্যন্ত নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় মায়ানমার সীমানা রয়েছে প্রায় ৭১ কিলোমিটার। এই সীমানা এলাকায় কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির ৮টি এবং নাইক্ষ্যংছড়ি ১১বিজিবির অধীনে ১৫টি বর্ডার অবজারবেশন পোস্ট রয়েছে। যার মধ্যে বর্তমানে ৪৭-৪৮ পিলারের মধ্যবর্তী পাহাড়ি এলাকা দিয়ে মায়ানমার থেকে চোরাই গরু আনা হচ্ছে। শুধু এই সীমান্ত নয়, সীমান্ত রক্ষিবাহিনী এক পয়েন্টে কঠোর হলে চোরাকারবারিরা অন্য পয়েন্ট ব্যবহার করে। প্রতিদিন নতুন নতুন রোড় চালু করছে চোরাকারবারিরা। পয়েন্টগুলো দুর্গম এলাকা হওয়ার সুবাদে চোরাকারবারিরা পাহাড়ি পথ বেয়ে জোয়ারিয়ানালা-কালিরছড়া হয়ে গরুগুলো সরাসরি নিয়ে যায় ঈদগাঁও বাজারে।

স্লিপ বাণিজ্য করে কোটিপতি:

গর্জনিয়া বাজারে গরুর একটি স্লিপের মূল্য ২ থেকে ৩ হাজার টাকা। বাজার ইজারাদার ছাড়াও স্থানীয় ইউপি সদস্য,  রাজনৈতিক নেতা মিলে তৈরি একটি সিন্ডিকেট সীমান্ত দিয়ে গরু পাচারে জড়িত। দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ কাজ করে তারা কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।

গর্জনিয়া বাজার সপ্তাহে হাট বসে দু’দিন, সোমবার ও বৃহস্পতিবার। প্রতি হাটের দিন সীমান্ত থেকে ২ থেকে ৩ শ গরু বাজারে তুলে বৈধ করার অনুমতি (স্লিপ) দেওয়া হয়। এর মধ্যে হাটের স্লিপের টাকা নেন গর্জনিয়া বাজারের ইজারাদার। স্লিপের টাকার সঙ্গে বিজিবির ও পুলিশ ফাঁড়ির নাম ব্যবহার করে নেন ২ থেকে ৫ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে গর্জনিয়া বাজার পার করে অন্যান্য হাটে তুলতে একটি বড় গরুর পেছনে খরচ হয় ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকার ওপরে। তারপরও প্রতি গরুতে চোরাকারবারিদের অন্তত ২০ হাজার টাকা লাভ থাকে বলে জানান স্থানীয়রা।

চোরাচালানকৃত এসব গরু মহিষের বেশির ভাগ ক্ষুরারোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। ফলে দেশীয় খামারগুলোতে অন্যান্য গবাদিপশুর মাঝে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ছে বলে অভিজ্ঞ মহল দাবি করেন।

গরুর আড়ালে ৬ জনের মাদক পাচার:

গরুর সাথে মাদকদ্রব্য বিশেষ করে ইয়াবা পাচার করে আসছে ওই চক্রটি। এবং ইতোমধ্যে তাদের একাধিক মাদকপাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূলত আলীকদম উপজেলার দুর্গম সীমান্ত এলাকা হয়ে পোয়ামুহুরী ও কুরুকপাতা এলাকার বিভিন্ন ঝিরিপথ দিয়ে চোরাকারবারিরা গবাদিপশুর সাথে মাদক নিয়ে আসছে। 

সাধারণ কৃষকের কান্না:

কচ্ছপিয়ার কৃষকরা তাদের নিজেদের গরু হাটে তুলতে পারছেন না চোরাকারবারিদের কারণে। কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, তিনি ৮টি গরু পালন করেছেন। সম্প্রতি মেয়ের বিয়ের জন্য গরুগুলো বেচতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মিয়ানমারের গরুর দাম কম হওয়ায় লোকসানের মুখে শেষ পর্যন্ত বেচতে পারেননি। পরে ৪ মণ ওজনের একটি গরু জবাই করে বিক্রি করে পেয়েছেন মাত্র ৭৫ হাজার টাকা। অথচ মিয়ানমারের না থাকলে গরুটি কমপক্ষে ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হতো। এলাকার আনসার মিয়া, আব্দুস সামাদ, হাফিজুর রহমান, রোকেয়া বেগম, হাসান আলীসহ অনেকেই বলেন, গরু পাচার ‘চক্রটি’ তাদের ধ্বংস করে দিচ্ছে। বাড়িতে পালা গরু পানির দামে বেচতে হচ্ছে।

ঘটনা স্বীকার করে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক জনপ্রতিনিধি বলেন, ‘প্রতিদিন মিয়ানমার থেকে অবৈধ গরু দেশে ঢোকছে– এটা ঠিক। সেই গরু জোয়ারিয়ানালা-কালিরছড়া হয়ে চলে যাচ্ছে বিভিন্ন বাজারে। গরু আনতে চক্রটি রাজনৈতিক নেতাদের সাথে সখ্যতা গড়ে কোটি কোটি টাকা পাচার করছে মিয়ানমারে।’

এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়ন (১১ বিজিবি) এর অধিনায়ক ও জোন কমান্ডার লে. কর্নেল সাহল আহমদ নোবেল বলেন, ‘সীমান্তের চোরাচালান কঠোর হস্তে দমন করা হবে। ইতিমধ্যে আমরা হাজার হাজার গরু জব্দ করেছি। ভবিষ্যতেও এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে তিনি বদ্ধপরিকর বলে জানিয়ে আরোও বলেন, যে সকল ব্যক্তিবর্গ এধরনের চোরাচালানি কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত এবং সে যেই হোক চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ [email protected]